মোঃ নাজমুল হাসান নাজির :
বগুড়ায় যমুনা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে বগুড়া জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি’র আরও অবনতি হয়েছে। অন্যদিকে নদী তীরের মানুষের মাঝে আতংক বৃদ্ধি পেয়েছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, বুধবার বিকেল ৩টায় যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ১১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যা ২৪ ঘন্টায় বৃদ্ধি পেয়েছে ২৩ সেন্টিমিটার। তার আগের ২৭ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৮ সেন্টিমিটার। অন্যদিকে বাঙালী নদীর পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এ নদীর পানি বুধবার বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ২৫দশমিক ৩সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ধুনট, সোনাতলা ও সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চল তলিয়ে গেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভ্যন্তরের গ্রাম গুলো প্লাবিত হয়েছে। এতে তিন উপজেলার প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি এলাকার লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ণ কেন্দ্র, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ উঁচু জায়গা গুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া যমুনা চরের অসংখ্য পরিবার ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে নৌকায় নদী তীরে চলে আসছেন। বন্যার দুর্যোগ থেকে স্থায়ী সমাধান খুঁজতে তারা চরের পৈত্রিক ভিটেমাটি ছেড়ে আসছেন। বানভাসী এলাকার অসুস্থ্য ও প্রতিবন্ধীরা চরম কষ্টে রয়েছেন। চারপাশে বন্যার পানির মধ্যে শিশুদের নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অভিভাবকরা।
বন্যা কবলিত এলাকার ধান, পাটসহ আবাদী জমির মৌসুমী ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় নিরাপদ পানি ও গো-খাদ্যের চরম সংকট রয়েছে। এদিকে বাঙালী নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরের গ্রাম গুলো প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে কৃষকের ক্ষেতের ফসল।এদিকে যমুনা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাঁধ নিয়ে নদী তীরের গ্রাম গুলোর মানুষের মাঝে ভাঙন আতংক দেখা দিয়েছে। বাঁধ ভেঙ্গে গেলে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ধুনট উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট ও পানি সংরক্ষণের জন্য জারকিন বিতরণ করা হয়েছে। সরকারি ভাবে বানভাসী মানুষের জন্য ইতিমধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শুরু করা হয়েছে। বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সহকারী প্রকৗশলী মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার (১৫জুলাই) বিকেল ৩টায় যমুনার পানি বিপদসীমার ১১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। অন্যদিকে বাঙালী নদীর পানি বিপদসীমার ২৫ দশমিক ৩ সে.মি নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। এখনো বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেনি। তবে বাঁধে সার্বক্ষনিক নজরদারী করা হচ্ছে।
Leave a Reply