শেখ মোঃ সাইফুল ইসলাম গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
আজ পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ ঐতিহ্যবাহী এ দিনটিতে বাঙ্গালী তার প্রাণের আবেগ ঢেলে দেয়। মেতে ওঠে প্রাণের নতুন বছরের উৎসবে তবে স্মরণকালে ইতিহাসের পাতায় এবারই প্রথম ভাটা পরেছে পহেলা বৈশাখ।
গোটা বিশ্বকে গ্রাস করেছে করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা এই মরণঘাতী ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই পায়নি বাংলাদেশেও। পুরো বিশ্বের সাথে বাংলাদেশেও চলছে অঘোষিত লকডাউন। আর এ লকডাউনের কালো ছায়ায় ঢেকে গেছে আমাদের প্রাণের “পহেলা বৈশাখ”। আজ আর রমনার বটমূলে প্রাণের উচ্ছাস নেই।
‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ সংগীতের সুর ছুঁয়ে যাওয়া নেই, নেই চারুকলার শিল্পীদের রঙতুলির আঁচর।অমঙ্গলকে দূর করতে আজ মিলিত হয়নাই মঙ্গল শোভাযাত্রা। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সেই চিরচেনা দৃশ্য আজ আর দেখা যাবে না। না দেখা আর না পাওয়ার মধ্যে তবুও আশা জেগে থাকবে, প্রত্যাশা ডানা মেলে থাকবে।
ঘরে ঘরে বন্দী হয়ে পড়েছে আনন্দের সেই বাঁধভাঙার জোয়ার, বদ্ধ ঘড়ে মুক্ত ছন্দে শিল্পী গাইছে তার গান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, আমরা ঘরে বসেই এবারের নববর্ষের আনন্দ উপভোগ করবো।কবিগুরুর কালজয়ী গান ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো, মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা” গেয়ে আহ্বান করবো নতুন বছরকে। অতীতের সকল জঞ্জাল-গ্লানি ধুয়ে-মুছে আমরা সামনে দৃপ্ত-পায়ে এগিয়ে যাবো; গড়বো আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।
করোনাভাইরাসের যে গভীর আঁধার আমাদের বিশ্বকে গ্রাস করেছে, সে আঁধার ভেদ করে বেরিয়ে আসতে হবে নতুন দিনের সূর্যালোকে। কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ভাষায় তাই বলতে চাই: মেঘ দেখ কেউ করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে, হারা শশীর হারা হাসি অন্ধকারেই ফিরে আসে। প্রধানমন্ত্রীর সেই অভয় বাণীর মধ্য দিয়েই আজ ঘরে ঘরে উদযাপন করা হবে পহেলা বৈশাখ।
মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন এবার আর হচ্ছে না, রমনার বটমূলে সূর্যোদয়ের সঙ্গে বর্ষোদয়ের যে বর্ষ আবাহন ছায়ানটের সেই অনুষ্ঠানও এবার হচ্ছে না। আবারো প্রধানমন্ত্রীর অভয় বাণী স্মরণ করতে হয়, যে আঁধার আমাদের চারপাশকে ঘিরে ধরেছে, তা একদিন কেটে যাবেই। বৈশাখের রুদ্র রূপ আমাদের সাহসী হতে উদ্বুদ্ধ করে, মাতিয়ে তোলে ধ্বংসের মধ্য থেকে নতুন সৃষ্টির নেশায়।
বিদ্রোহী কবির ভাষায় ঐ নূতনের কেতন ওরে কাল-বোশেখীর ঝড়, তোরা সব জয়ধ্বনি কর, তোরা সব জয়ধ্বনি কর, ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর, প্রলয় নূতন সৃজন-বেদন, আসছে নবীন- জীবন-হারা অ-সুন্দরে করতে ছেদন
Leave a Reply